সুলতান মাহমুদের ১৭ বার ভারত অভিযানসমূহ

ভারতে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা

সুলতান মাহমুদের ১৭ বার ভারত অভিযানসমূহ
আরু পড়ুনঃ 

গজনির সুলতান মাহমুদ: সামরিক অভিযান, চরিত্র ও কৃতিত্ব (ইসলামের ইতিহাস) ২য় পত্র

আরু পড়ুনঃ 

আরবদের সিন্ধু এবং মুলতান বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতবর্ষের উত্তর-পশ্চিম অঞলের

আরু পড়ুনঃ 

ভারতে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা - ইসলামের ইতিহাস ২য় পত্র

সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযানসমূহ (Sultan Mahmud's expeditions to India)

সুলতান মাহমুদ ২৭ বছরে মােট ১৭ বার ভারতবর্ষে অভিযান পরিচালনা করেন এবং প্রায় প্রত্যেকটি অভিযানে জয়লাভ করেন।
নিচে তার অভিযানগুলাের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হলাে-

১. সীমান্তবর্তী শহর ও দুর্গ দখল: সুলতান মাহমুদ ১০০০ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে প্রথম ভারত অভিযান পরিচালনা করেন। ঐতিহাসিক ফিরিস্তা ও নিজামউদ্দিনের মতে, মাহমুদ তার রাজ্যের সীমান্ত নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে প্রথম
অভিযানে খায়বার পাস সীমান্তের কতকগুলাে দুর্গ ও শহর অধিকার করেন । বিজয়ী মাহমুদ এ এলাকা থেকে পর্যাপ্ত ধন-সম্পদও লাভ করেন।

২. রাজা জয়পালের বিরুদ্ধে অভিযান: সুলতান মাহমুদ ভারতে দ্বিতীয় অভিযান পরিচালনা করেন পিতৃশত্রু পাঞ্জাবের রাজা জয়পালের বিরুদ্ধে। ঈশ্বরী প্রসাদের মতে, “ধর্মের পতাকা উচ্চে উত্তোলন, স্বীয় কর্তৃত্ব বৃদ্ধি এবং সত্য, ন্যায় ও সুবিচারের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে মাহমুদ ১০০১ খ্রিষ্টাব্দে এ অভিযান পরিচালনা করেন।” ২৮
নভেম্বর পেশােয়ার যুদ্ধে সুলতান মাহমুদ ও রাজা জয়পালের বাহিনী পরস্পর মুখােমুখি হয়।

যুদ্ধে রাজা জয়পাল পরাজিত এবং পুত্র, পৌত্র এবং নিকটাত্মীয় ও উচ্চ রাজকর্মচারীসহ বন্দি হন। পরে একটি সন্ধি মােতাবেক ২,৫০,০০০ দিনার অর্থ ও অন্যান্য কয়েকটি শর্তে জয়পালকে মুক্তি দেওয়া হলেও পরাজয়ের অপমান ও আত্মগ্লানি সহ্য করতে না পেরে পুত্র আনন্দপালের হাতে রাজ্যভার অর্পণ করে ১০০২ খ্রিষ্টাব্দে রাজা জয়পাল জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে আত্মাহুতি দেন।

৩. বিজয় রায়ের বিরুদ্ধে অভিযান: সুলতান মাহমুদ তৃতীয় অভিযান পরিচালনা করেন ঝিলাম নদীর পশ্চিম তীরবর্তী ভিরা রাজ্যের বিরুদ্ধে। ১০০৪–১০০৫ খ্রিষ্টাব্দে পরিচালিত এ অভিযানে ভিরার রাজা বিজয় রায় পরাজিত হন এবং পরে তিনি আত্মহত্যা করেন । ভিরা গজনির অঙ্গরাজ্যে পরিণত হয়।

৪. মুলতান অধিকার: ১০০৬ খ্রিষ্টাব্দে সুলতান মাহমুদ মুলতানের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেন।

মুলতানের শিয়া কারামতিয়া সম্প্রদায়ের শাসক আবুল ফাতাহ দাউদ ভারতে সুলতান মাহমুদের রাজ্য সম্প্রসারণ প্রতিহত করার জন্য পাঞ্জাবের রাজা আনন্দপালের সাথে মৈত্রী স্থাপন করে সুলতানের বিরাগভাজন হয়েছিলেন। ক্ষুব্ধ
সুলতান মাহমুদ ১০০৬ খ্রিষ্টাব্দে মুলতান অবরােধ করেন।

সাতদিন অবরুদ্ধ থাকার পর দাউদ বশ্যতা স্বীকার করেন এবং নিষ্ঠার সাথে ইসলামি শরিয়তের অনুশাসন পালন ও বার্ষিক বিশ হাজার দিরহাম করদানের অঙ্গীকার করে রাজ্য রক্ষা করেন।

৫. সুখপালের বিরুদ্ধে অভিযান: সুলতান মাহমুদের মুলতান অবরােধের সুযােগে কাশগড়ের রাজা ইলাক খান তার রাজ্য আক্রমণ করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ভারতে বিজিত অঞ্চলগুলাে নাওয়াজ শাহ'র (পাঞ্জাবের রাজা জয়পালের দৌহিত্র সুখপাল ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নাওয়াজ শাহ নাম, গ্রহণ করেছিলেন) শাসনাধীনে অর্পণ করে গজনি প্রত্যাবর্তন করেন।

সুলতান মাহমুদ যখন কাশগড় রাজার সাথে যুদ্ধে লিপ্ত, সে সময় নাওয়াজ শাহ বিদ্রোহ করেন এবং ইসলাম ত্যাগ করে পুনরায় হিন্দুধর্মে প্রত্যাবর্তন করেন। সুখপালের এরূপ ধৃষ্টতায় ক্ষুব্ধ হয়ে মাহমুদ ১০০৭ খ্রিষ্টাব্দে তার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে পরাজিত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

৬. আনন্দপালের বিরুদ্ধে অভিযান: সুলতান মাহমুদের ষষ্ঠ অভিযান ছিল রাজা আনন্দপালের বিরুদ্ধে। ১০০৮
খ্রিষ্টাব্দে এ অভিযান পরিচালনা করা হয় ।

তুর্কি বাহিনীর প্রবল গতিস্রোত প্রতিহত করা, দেশরক্ষা এবং স্বীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত রাখার লক্ষ্যে রাজা আনন্দপাল উজ্জয়িনী, গােয়ালিয়র, কালিঞ্জর, কনৌজ, দিল্লি ও আজমিরের হিন্দু রাজাদের নিয়ে একটি মহাজোট গঠন করেন। দুর্ধর্ষ ‘খােক্কর’ জাতিও মহাজোট সৈন্যদের সাথে যােগ দেয়।
তুমুল যুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত সুলতান মাহমুদ বিজয়ী হন।
বিজয়কে সুনিশ্চিত করেছিল।

৭. নাগরকোট ও মুলতান বিজয়: আনন্দপালের বিরুদ্ধে সাফল্যে উদ্দীপ্ত হয়ে সুলতান মাহমুদ কাংড়া পাহাড়ের
নাগরকোট' বা ভীমনগর’ দুর্গ আক্রমণ করেন। ১০০৯ খ্রিষ্টাব্দে নাগরকোট দুর্গ অধিকৃত হয় ।

৮,দাউদের বিদ্রোহ দমন: এরপর মুলতানের শাসনকর্তা আবুল ফাতাহ দাউদ পুনরায় বিদ্রোহী হলে সুলতান মাহমুদ ১০১০ খ্রিষ্টাব্দে তার বিরুদ্ধে পুনরায় অভিযান চালিয়ে দাউদকে ঘাের দুর্গে কারারুদ্ধ করেন।

৯. ত্রিলােচনপালের বিরুদ্ধে অভিযান: সুলতান মাহমুদ ভারতে তার নবম অভিযান পরিচালনা করেন রাজা আনন্দপালের পুত্র রাজা ত্রিলােচনপালের বিরুদ্ধে।

১০১৪ খ্রিষ্টাব্দে সুলতান মাহমুদ ত্রিলােচনের বিরুদ্ধে অতর্কিতে আক্রমণ চালালে তিনি পরাজিত হন এবং কাশ্মির রাজা তুঙ্গর কাছে আশ্রয় নেন। সুলতান মাহমুদ ত্রিলােচনের রাজধানী নন্দনা দখল করে কাশ্মির আক্রমণ করেন। মাহমুদের কাছে সম্মিলিত বাহিনী পরাজিত হয়। ত্রিলােচন পিতৃরাজ্যে ফিরে আসেন এবং বুন্দেলখণ্ডের চান্দেলা বংশীয় রাজা বিদ্যাধরের সাথে মৈত্রী চুক্তি করেন।

তবে তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। সুলতান মাহমুদ পুনরায় আক্রমণ করে ত্রিলােচনপালকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করেন। কিন্তু ১০২৬ খ্রিষ্টাব্দে রাজা ভীম পালের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে পাঞ্জাবের বিখ্যাত এ হিন্দুশাহী রাজবংশের পতন ঘটে।

১০. থানেশ্বর বিজয়: সুলতান মাহমুদের থানেশ্বরের বিরুদ্ধে দশম অভিযানকে ঐতিহাসিক ঈশ্বরী প্রসাদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিহিত করেছেন। হিন্দু শক্তির তীব্র প্রতিরােধ সত্ত্বেও ১০১৪ খ্রিষ্টাব্দে সুলতান মাহমুদ থানেশ্বর দুর্গ অধিকার করেন। থানেশ্বরের হিন্দুদের পবিত্র স্থান চক্ৰস্বামী মন্দিরটি ধ্বংস করে মাহমুদ প্রচুর ধনরত্ন ও ব্রোঞ্জের তৈরি চক্ৰস্বামী বিগ্রহ নিয়ে গজনি প্রত্যাবর্তন করেন।

১১. কাশ্মিরের বিরুদ্ধে অভিযান: সুলতান মাহমুদের একাদশ অভিযান ছিল কাশ্মিরের বিরুদ্ধে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, প্রতিকূল পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি এবং সর্বোপরি দুর্ভেদ্য লৌহকোট থাকায় দুর্গ জয়ে ব্যর্থতার কারণে ১০১৫ খ্রিষ্টাব্দে পরিচালিত মাহমুদের এ অভিযান সফল হয়নি ।

১২. মথুরা ও কনৌজ বিজয়ঃ সুলতান মাহমুদের দ্বাদশ অভিযানটিও বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। সুলতান ১০১৮ খ্রিষ্টাব্দে মথুরা ও কনৌজ জয়ের উদ্দেশ্যে গজনি ত্যাগ করেন। পথিমধ্যে বারানে (আধুনিক বুলন্দ শহর) রাজা হরদত্তকে পরাজিত করেন। দশ হাজার অনুচরসহ রাজা হরদত্ত ইসলাম গ্রহণ করেন।

যমুনা তীরবর্তী মেবার রাজ্যের রাজা কুলবন্দর মাহমুদের নিকট পরাজিত হয়। এখান থেকে বিপুল ধনরত্ন অধিকার করে সুলতান মথুরার দিকে অগ্রসর হন। মন্দির-প্রধান মথুরা হিন্দুদের একটি পবিত্র নগরী। একরকম বিনা যুদ্ধেই মথুরা বিজিত হয়। মথুরার মন্দির ও বিগ্রহাদিতে রক্ষিত প্রচুর ধনরত্ন মুসলিম বাহিনী করায়ত্ত করে ।

সুরক্ষিত দুর্গ ঘেরা বৃন্দাবন নগরীও মাহমুদের নিকট আত্মসমর্পণ করে। ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি মাসে কনৌজ নৃপতি রাজ্যপালকে পরাস্ত করে সুলতান মাহমুদ কনৌজ অধিকার করেন। কনৌজ থেকেও প্রচুর পরিমাণ অর্থ-সম্পদ মাহমুদের হস্তগত হয়। গজনি প্রত্যাবর্তন পথে মাহমুদ মুঙ্গ, অসনি এবং শার্বা দুর্গ দখল করেন।

১৩. চান্দেলা রাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযান: কনৌজ নৃপতি রাজ্যপাল সুলতান মাহমুদের বশ্যতা স্বীকার করায় পার্শ্ববর্তী পরাক্রমশালী রাজপুত রাজন্যবর্গ অপমানবােধ করেন।

চান্দেলা রাজা গােন্ডা গােয়ালিয়র রাজ্যের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কনৌজ আক্রমণ করে রাজা রাজ্যপালকে হত্যা করেন। মিত্র রাজার এ হত্যাকাণ্ডে সুলতান মাহমুদ ক্ষুব্ধ হন এবং এ হত্যার প্রতিশােধ নেওয়ার জন্য ১০১৯ খ্রিষ্টাব্দে চান্দেলা রাজ্য আক্রমণ করেন। রাজা গােন্ডা পরাজিত হলে বিজয়ী বাহিনী চান্দেলা রাজ্যের রাজধানীতে প্রবেশ করে।

ভারতে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা ইসলামের ইতিহাস ২য় পত্র!

১৪. গােঙ্গালিয়র আক্রমণ: ভারতবর্ষে সুতান মাহমুদ চতুর্দশ অভিযান প্রেরণ করেন গােয়ালিয়রের বিরুদ্ধে।
১০২১-১০২২ খ্রিস্টাব্দে পরিচালিত এ অভিযানে গােয়ালিয়র অধিপতি সুলতানের বশ্যতা স্বীকার করে কর প্রদানের
প্রতিশ্রুতি দেন।
১৫. কালিঞ্জর বিজয়: গোয়ালিয়র পদানত মুর সালতান মাহমুদ কালির অভিমুখে যাত্রা করেন। চান্দেলা রাজ গােন্ডা তার দুর্গ রক্ষায় ব্যর্থ হয়ে সুলতানের সাথে সনি স্থাপনে সম্মত হন। ঐতিহাসিক নিজামউদ্দিন ও ফিরিশতার
বর্ণনা মতে, চান্দেলা রাজা সুলতান মাহমুদকে প্রভূত পরিমাণ ধন-রত্ন দিয়ে মুক্তি পান ।

১৬. সােমনাথ মন্দিন বিজয়: সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযানসমুহের
মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সর্বাপেক্ষা উল্লেখযােগ্য সােমনাথ মন্দির
লুণ্ঠন। অধ্যাপক নাজিম সােমনাথ অভিযানকে ইসলামের ইতিহাসের
অন্যতম দুঃসাহসিক কাজ বলে অভিহিত করেছেন। ড, মম, মােহর
আলী বলেন, সােমনাথ অভিমান ছিল মাহমুদের সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
সামরিক অভিযান। সোমনাথ মন্দিরটি গুজরাটের চালুক্য রাজ্যের
কাথিওয়াডের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত। মন্দিরটি ছিল প্রতি ধনৈশ্বর্যে পরিপূর্ণ। মুসলিম ঐতিহাসিকনের বিবরণ মতে, মন্দিরের পুরােহিতদের ধারণা ছিল এ মন্দিরটি বিজয় মাহমুদের সাধ্যের মিনাহ দিন
বাইরে।

মন্দিরে গচ্ছিত বিপুল ধনরাজির সংবাদ পেয়ে সুলতান মাহমুদ সােমনাথ আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন ।
১০২৬ খ্রিষ্টাব্দে পরিচালিত অভিযানে প্রবল বাধা সত্ত্বেও সুলতান মাহমুদ জয়লাভ করেন। মন্দিরসহ ৩০০ বিগ্রহ ধ্বংস না হয় । এ মন্দির হতে মাহমুদ দু’কোটিরও বেশি স্বর্ণমুদ্রা বিগ্রহাদির অলংকার থেকে প্রচুর মূল্যবান।

মণিমুক্তা নিয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। ঈশ্বরী প্রসাদ বলেন, “সোমনাথ বিতায় মাহমুদের ললাটে নতুন বিজয়
গৌরব সংযুক্ত করে ।" এ বিজয়া দ্বারা তিনি মুসলমানদের আত্মশ্লাঘাকে খুশি করে অনেকের কাছে তিনি মহানায়করূপে প্রতিভাত হন ।

১৭, জাঠদের বিরুদ্ধে অভিযান: সুলতান মাহমুদের সপ্তদশ এবং ভারতে শেষ অভিযান পরিচালিত হয় জাঠদের বিরুদ্ধে। সােমনাথ বিজয় শেষে পানি প্রত্যাবর্তন পথে মাহমুদের তুর্কি বাহিনী লাহােরে জাঠদের উৎপীড়নের শিকার হয়েছিল। এ ঘটনার প্রতিশােধ গ্রহণের উদ্দেশ্যে মাহমুদ ১০২৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারতে তার শেষ অভিযান পরিচালনা করেন। তুর্কি বাহিনীর হাতে জাঠরা পরাজিত হয়।

একক কাজ : ছকটি সঠিক করে সাজাও:
সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযানসমূহ

  • অভিযান
  • সন
  • মুলতান অধিকার
  • ১০০৭
  • সুখপালের বিরুদ্ধে অভিযান
  • ১০১৪
  • থীনেশ্বর বিজয়া।
  • ১০১৫
  • কাশ্মিরের বিরুদ্ধে অভিযান
  • ১০০৬