উমাইয়া খিলাফত এর প্রতিষ্ঠা ও পতন, সিফফিনের যুদ্ধের ঘটনা

মাইয়া খিলাফত (The Umayyad Khilafat)

৬৬১ খ্রিস্টাব্দে হযরত আলী (রা) এর মৃত্যুর পর আমির মুয়াবিয়া কর্তৃক উমাইয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠা ইসলামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। হযরত মুয়াবিয়া (রা) কর্তৃক এ রাজবংশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইসলামের ইতিহাসে রাজতন্ত্রের সূচনা হয়। উমাইয়াদের আরব সাম্রাজ্যের ক্ষমতা লাভের ফলে কেবল বংশানুক্রমিক শাসনেরই সূচনা হয়নি, শাসননীতিরও আমূল পরিবর্তন ঘটে।

ফলে মুসলমানদের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে নতুন নতুন প্রভাব ও রীতিনীতির উদ্ভব হয়। এ বংশের রাজত্বকালে দামেস্ক মুসলিম সাম্রাজ্যের কেন্দ্রভূমিতে পরিণত হয়।

এ শাসনামলে পূর্ববর্তী অনেক শাসনকার্যের সংস্কার সাধন করা হয়। সম্পত্তিকে স্বীয় মালিকানাধীনে নিয়ে আসা হয় এবং বায়তুল মালের সম্পত্তি নিতা কাজে ব্যয় করা হয়। এ ছাড়াও এ বংশের শাসনামলেই আরব জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটে এবং এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকা মহাদেশে ইসলামের বিজয়কেতন উড্ডীন হয়।

তবে এ বংশের অযোগ্য শাসনের কর্মকাণ্ড মুসলমানদের হৃদয়ের ভিতকে নাড়া দেয়। শেষ পর্যন্ত নানা বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হয়ে ৭৫০ খ্রিষ্টাব্দে জাবের যুদ্ধে আব্বাসি শক্তির নিকট এ বংশের পতন ত্বরান্বিত হয়। উল্লেখ্য যে, উমাইয়া রাজবংশের ১৪ জন খলিফা প্রায় ৮৯ বছর শাসন করে।

উমাইয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠা (Establishment of the Umayyad Dynasty)

সিফফিনের যুদ্ধের ঘটনা ও উমাইয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠা:

ইসলামের ঐক্য ও সংহতি অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য উষ্ট্রের যুদ্ধের পর খলিফা আলী (রা) আমির মুয়াবিয়ার বিরুদ্ধে ৬৫৭ এখাব্দের জুলাই মাসে ৫০,০০০ সৈন্য নিয়ে দামেস্কের দিকে অগ্রসর হলে মুয়াবিয়াও প্রস্তুতি নেন। অহেতুক রক্তপাত এড়াতে খলিফা আলী (রা) মুয়াবিয়াকে দূত মারফত শান্তির প্রস্তাব দেন। 

কিন্তু মুয়াবিয়ার উদ্ধত ও জঙ্গি মনোভাবে যুদ্ধ সম্ভাবনাময় হয়। সিফফিনের রণপ্রান্তর তুমুল যুদ্ধে মুয়াবিয়ার পরাজয় যখন অনিবার্য তখন তাঁর সেনাপতি ও উপদেষ্টা রহিন আল আসের পরামর্শে যুদ্ধ স্থগিত রাখার জন্য অগ্রবর্তী সৈন্যদল তাদের পড়াকার শীর্ষে ও বর্শার মাথায় পবিত্র কুরআন শরিফের পাতা বিদ্ধ করে বলে ওঠে "এখানে আল্লাহর কুরআন—এটা আমাদের বিরোধ মীমাংসা করে দেবে।" এরূপ পরিস্থিতিতে আলীর বাহিনীতে যারা কুরআনের হাফিজ ছিলেন তারা কুরআনের মর্যাদা ও পবিত্রতা রক্ষার্থে যুদ্ধ বন্ধ করতে বলেন। খলিফা আলী মুয়াবিয়ার শঠতা বুঝতে পারলেও যুদ্ধ বন্ধ করতে বাধ্য হন। বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য খলিফা আলী আবু মুসা আল আশারি ও মুয়াবিয়া আমর বিন আল আসকে মধ্যস্থতাকারী নিযুক্ত করেন। ৬৫৯ খ্রিষ্টাব্দে 'দুমাতুল জন্দলে' সালিশি বৈঠক বসে। বৈঠকে স্থির হয় যে, আবু মুসা প্রথমে আলীর পদচ্যুতি এবং পরে আমর মুয়াবিয়ার পদচ্যুতি ঘোষণা করবেন। 

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সহজ-সরল আবু মুসা আলীর পদত্যাগ ঘোষণার পরই ধূর্ত আমর আলীর পদত্যাগ মেনে নিয়ে বলেন, মুসলিম খিলাফত যেহেতু এখন খলিফাশূন্য তাই এ খিলাফতের মঙ্গলের জন্য আমি আমির মুয়াবিয়াকে মুসলিম বিশ্বের খলিফা হিসেবে মনোনয়ন দিলাম। আমর বিন আল আসের এ বিশ্বাসঘাতকতায় খলিফা আলীর সমর্থকরা ক্রোধে ফেটে পড়ে এবং তারা বৈঠক ত্যাগ করে। এভাবে ৬৬১ খ্রিষ্টাব্দে মুয়াবিয়া নিজেকে খলিফা হিসেবে ঘোষণা করে মুসলিম বিশ্বে অশান্তির বীজ বপন করেন।

খিলাফত সম্পর্কে আলী, আশারি বা আমর বিন আল আস কারো কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার নেই। এখানে একমাত্র জনগণই সিদ্ধান্ত গ্রহণের দাবিদার। অথচ ইসলামের খিলাফতের এ গণতান্ত্রিক পদ্ধতির অবমাননা করে মাত্র দুই ব্যক্তির রায়কে চূড়ান্ত বলে গ্রহণ করা হয়।

অতএব এই রায় ছিল সম্পূর্ণ নীতি বহির্ভূত এবং এর ফলে এরক অপ্রতিরোধ্য মুসলিম শক্তি ত্রিধারায় বিভক্ত হয়। যথা- (১) আলী (রা) সমর্থক বা শিয়া (২) মুয়াবিয়ার দল ও (৩) খাঁটি গনন্ত্রিক খারেজি সম্প্রদায়। দুমাতুল জান্দলের রায় আলীর জন্য কূটনৈতিক পরাজয় ছিল।

মুয়াবিয়ার পদচ্যুতির জন্য কোনো খিলাফত ছিল না। সালিশি তাঁকে আলীর সমকক্ষ করে তোলে এবং আলীকে একজন মিথ্যা দাবিদার হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। পি. কে. হিট্টি বলেন, "আলীর মতো খলিফার সাথে তাঁর (মুয়াবিয়ার) চুক্তি হওয়ায় তাঁর সম্মান বেড়ে আলীর সমান হলো, পাশাপাশি আলীর মর্যাদা ক্ষুণ্ন হলো।" সংঘর্ষের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে আবদুল্লাহ ইবনে ওয়াহাবের নেতৃত্বে ১২ হাজার লোকের একটি দল 'লা হুকমা ইন্না লিল্লাহ' বা 'আল্লাহর আদেশ ব্যতীত কোনো বিধান নেই' ঘোষণা দিয়ে খলিফা আলীর দল থেকে ত্যাগ করে।

খুদা বকশ-এর মতে, ইসলামের ইতিহাসে সর্বপ্রথম একটি ধর্মীয় রাজনৈতিক দল (Religio-political Group) হিসেবে খারেজি নামে একটি সম্প্রদায়ের উদ্ভব হয়। এরা হযরত আলীর খিলাফত আমলে আলীকে কাফের ঘোষণা দিয়ে তাঁকে হত্যা করে এবং মুয়াবিয়া ও আমর ইবনে আসকে হত্যার ঘোষণা দেয়। পরের দু'জনকে হত্যা করতে না পারলেও এ দলটি উমাইয়া ও আব্বাসি শাসনামলের পুরো সময়ে রাজ্যের সর্বত্র অশান্তি, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিতে তৎপর ছিল।

সিফফিনের গৃহযুদ্ধের ফলে পাঁচ হাজার মুসলিম নিহত হয়। একপর্যায়ে আলী নিহত হন। সাথে সাথে গণতন্ত্র ও খিলাফতের অবসান ঘটে এবং বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্রের উদ্ভব ঘটে। রাজকোষ খলিফার ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত হয়। সকল জনগণ শাসক ও শাসিত এ দুই দলে বিভক্ত হয়। এ যুদ্ধের মাধ্যমে শুধু আলীরই পরাজয় ঘটেনি বরং মহানবি (স)-এর আদর্শে অনুপ্রাণিত খুলাফায়ে রাশেদিনের প্রজাতন্ত্রের অবসান ঘটে এবং রাজতন্ত্রের সূচনা হয়, যা ইসলামের মৌলিক আদর্শে আঘাত হানে। পি. কে. হিট্টি বলেন, “৬৬১ খ্রি. আলীর মৃত্যুর সাথে সাথে আবু বকর (৬৩২)-এর হাত ধরে খিলাফতের যে প্রজাতন্ত্রী যুগের সূচনা হয়েছিল তা শেষ হয়। "

দুমাতুল জন্দালের যুদ্ধে ৬৬০ খ্রিষ্টাব্দে মুয়াবিয়া নিজেকে আনুষ্ঠানিকভাবে খলিফা হিসেবে ঘোষণা করেন। কিন্তু হযরত আলী যত দিন জীবিত ছিলেন তত দিন তাঁর খিলাফত পূর্ণতা পায়নি। দুমাতুল জন্দালের পর খারেজি আততায়ীর হাতে হযরত আলী শহিদ হলে মুয়াবিয়া সিরিয়ার দামেস্কে রাজধানী স্থানান্তর করলে উমাইয়া খিলাফত অনেকটা নিরাপদ হয়। এ সময় আলীর পুত্র হাসান কুফায় খলিফা হিসেবে অভিষিক্ত হলে মুয়াবিয়া ইরাক আক্রমণ করেন। এমতাবস্থায় হাসান কয়েস নামক একজন ব্যক্তিকে সেনাপতি নিযুক্ত করে উমাইয়াদের প্রতিহতের জন্য অগ্রসর হন। 

কিন্তু একটি যুদ্ধে সেনাপতি কয়েস নিহত হন। এ সময় হাসানের সেনাদলে বিদ্রোহ দেখা দেয়। পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হওয়ায় হাসান মুয়াবিয়ার সাথে সন্ধি করেন। সন্ধির শর্তানুযায়ী মুয়াবিয়াকে তাঁর জীবনকালের জন্য খিলাফত দেওয়া হয় এবং মুয়াবিয়ার মৃত্যুর পর আলীর দ্বিতীয় পুত্র হুসাইন খলিফা নিযুক্ত হবেন বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সৈয়দ আমীর আলীর মতে, হাসানের পদত্যাগের পর মুয়াবিয়া প্রকৃতপক্ষে ইসলাম-জগতের খলিফা হন এবং এ ঘটনার মধ্য দিয়ে উমাইয়া খিলাফত প্ৰকৃতভাবে আনুষ্ঠানিক শাসকবংশের মর্যাদা লাভ করে।

উমাইয়া বংশ আরবের বিখ্যাত কুরাইশ বংশেরই একটি শাখা।

উমাইয়া খিলাফতের পতনের ঘটনাবলি

আব্বাসি আন্দোলন: ইমাম হাসানের প্রতি মুয়াবিয়ার বিশ্বাসঘাতকতা, কারবালার মর্মান্তিক ঘটনা, আলীর বংশধর সায়েদের হত্যা, তাছাড়া আরব ও অনারব মুসলমানদের মধ্যে বৈষম্যমূলক নীতি, বিজিত জাতির সদস্যদের বিশেষ করে পারসিকদের সরকারি চাকরির বড় বড় পদ ও সামাজিক অনুষ্ঠান হতে অপসারিত করা, হিমারীয় ও মুদারীয় দ্বন্দ্ব সর্বোপরি উমাইয়া খলিফাদের রাষ্ট্রের প্রতি অবহেলা প্রভৃতি কারণে আব্বাসি আন্দোলন গড়ে ওঠে। আন্দোলনকারীরা মুহাম্মদ বিন আলীর মাধ্যমে খিলাফতে হাশেমি বংশের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য 'আব্বাসি মতবাদ' নামে একটি মতবাদ প্রচার করতে থাকেন।

এ মতবাদ অনুযায়ী খিলাফতের দায়িত্ব আলী বংশীয়দের হাতে প্রদান করা উচিত এবং হযরত আলীর ঔরসজাত পুত্র আল হানিফার ওপর ইমামতির দায়িত্ব অর্পিত হওয়া উচিত। কারণ, ইমাম হুসাইনের নাবালক পুত্র জয়নুল আবেদীন ইমামতি করার অনুপযুক্ত। এরপর আব্বাসিরা সর্বদলীয় প্রচারণা শুরু করে কুরাইশদের হাশেমি গোত্রের পক্ষে খিলাফতের দাবি করতে থাকে। এরপর ইবনে আব্বাসের পুত্র আলীর মৃত্যুর পর মুহাম্মদ বিন আলী নেতৃত্ব গ্রহণ করে আব্বাসিদের প্রচারণা এগিয়ে নিতে থাকেন এবং এ লক্ষ্যে তিনি হযরত ফাতেমার বংশধরদের নিজ দলে আনতে সক্ষম হন।

মুহাম্মদ বিন আলী নিজের দাবির পক্ষে সমর্থন ও আনুগত্য লাভের জন্য এক ব্যাপক প্রচারকার্য শুরু করেন। কিন্তু মুহাম্মদ বিন আলীর উদ্দেশ্য সফল হওয়ার আগেই তিনি ৭৪৪ খ্রিষ্টাব্দে মারা যান। মৃত্যুর পূর্বে তিনি ইব্রাহিম, আবুল আব্বাস এবং আবু জাফর নামে তিনি পুত্রকে পর্যায়ক্রমে উত্তরাধিকারী করে যান। এমতাবস্থায় আবু মুসলিম খোরাসানি আব্বাসি আন্দোলনের নেতৃত্ব গ্রহণ করে ব্যাপক প্রচারকার্য চালনা করেন। সৈয়দ আমীর আলীর মতে, 'আৰু মুসলিম খোরাসানি ম্যাকিয়াভেলির মতো দূরদর্শী ছিলেন।

তিনি রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সেনাপতি কাহতাবার মাধ্যমে খোরাসান ও ফারগনা দখল করতে সক্ষম হন। ইতোমধ্যে আলী বংশীয় ইব্রাহিম উমাইয়াবিরোধী কাজের জন্য বন্দি হন এবং পরে তাঁকে হত্যা করা হলে এ সুযোগে আবু মুসলিম সেনাপতি কাহতাবা ও খালিদ বিন বার্মাককে ইরাকে প্রেরণ করেন। এখানে তুমুল যুদ্ধের পর সেনাপতি কাহতাবা মৃত্যুবরণ করলেও কাহতাবার পুত্র হাসান বিন কাহতাবা ইরাকের শাসনকর্তাকে পরাজিত করে কুফা অধিকার করেন।

এরপর আব্বাসি বাহিনী নিহাওয়ান্দ ও মেসোপটেমিয়া জয় করে ইব্রাহিমের মনোনয়নানুসারে ৭৪৯ খ্রিষ্টাব্দে কুফার এক মসজিদে আবুল আব্বাসকে খলিফা বলে ঘোষণা করা হয়। তিনি ভ্রাতৃহত্যার প্রতিশোধ এবং উমাইয়া নৃশংসতার প্রতিশোধ নিবেন বলে শপথ গ্রহণ করেন এবং 'আস সাফফাহ' (রক্তপিপাসু) উপাধি গ্রহণ করেন। এ সময়ই আবু আয়ুন মারওয়ানের পুত্রকে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করেন।

জাবের যুদ্ধ ও উমাইয়াদের চূড়ান্ত পতন: খোরাসান, ইরাক ও পারস্যের পতন এবং পুত্রের পরাজয় প্রভৃতি কারণে উমাইয়া খলিফা মারওয়ান আব্বাসিদের নিশ্চিহ্ন করার দৃঢ় সংকল্প করেন। বিগত জীবনের কর্মতৎপরতা নিয়ে খিলাত পুনরুদ্ধারের জন্য মারওয়ান ১,২০,০০০ সৈন্য নিয়ে দজলা নদী অতিক্রম করে জাব নদীর দিকে অগ্রসর হন। 

ইতোমধ্যে আবু আয়ুন আবুল আব্বাস কর্তৃক প্রেরিত সৈন্যের সাহায্য পান এবং এ সম্মিলিত বাহিনীর সেনাপতি হলেন আবুল আব্বাসের জনৈক পিতৃব্য আবদুল্লাহ। ৭৫০ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ জানুয়ারি জাব নদীর পূর্ব তীরে কুসাফ নামক স্থানে উভয় বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং যুদ্ধ অনেক দিন ধরে চলে। কিন্তু উমাইয়া খলিফা মারওয়ান শেষ পর্যন্ত আব্বাসিদের আক্রমণ প্রতিহত করতে ব্যর্থ হন। মারওয়ান শোচনীয়ভাবে আব্বাসিদের নিকট পরাজিত হন।

উমাইয়া খিলাফতের পতনের ফলাফল: পরাজিত মারওয়ান প্রথমে মসুল এর পর হাররান এবং সেখান থেকে দামেস্কে পলায়ন করেন। অবশেষে তিনি প্যালেস্টাইন হয়ে মিসরের দিকে পলায়ন করছিলেন। এ সময় তিনি আব্বাসি সৈন্যদের দ্বারা ধৃত হন এবং ৭৫০ খ্রিষ্টাব্দে নিহত হন। 

তাঁর মৃত্যুর সাথে সাথে উমাইয়া বংশের দীর্ঘ ৯০ বছরের শাসনের অবসান ঘটে এবং শুরু হয় আব্বাসি শাসন। ঐতিহাসিক জাবের যুদ্ধের গুরুত্ব সম্পর্কে ঐতিহাসিক আমীর আলী বলেন, “এই স্মরণীয় যুদ্ধ উমাইয়া শাসনের সমাপ্তি ঘটায়।"** পি. কে. হিট্টি আরো বলেন, “এর ফলে আরববাদী নীতির পরিবর্তন হলো, কিন্তু ইসলাম অপ্রতিহত গতিতে চলতে থাকল এবং আন্তর্জাতিক ইসলামের ছদ্মবেশে ইরানিদের বিজয়কেতন চলতে থাকে।

Read MORE: উত্তর আফ্রিকায় ফাতেমি খিলাফত | Fatimid Khilafat in North Africa